6:46 am, Saturday, 19 October 2024

গৌরীপুরের কৃতিসন্তান স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদিরের ৭৭তম জন্মদিন পালন

 

মোহাম্মদ সাইফুল আলম,
ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদির এর
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ৭৭তম জন্মদিন। তাঁর ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বিনামূল্যে হতদরিদ্র, অসহায় ও চিকিৎসাবঞ্চিত ৬২৮ জনের ছানি অপারেশন সম্পন্ন করবেন ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল। চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২০ সালে তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। দেশে গ্রামীণ এলাকায় চোখের চিকিৎসায় অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের বিলাসপুরে ২০২৩ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া অফথালমোজিক্যাল সোসাইটি -এর সম্মেলনে ‘গুরু পুজান’ পদক করেন।
জন্মদিন উপলক্ষে ময়মনসিংহের গৌরীপুর ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ একাডেমী অফ অর্থালোমোলজি ও বাংলাদেশ ইউবিয়া সোসাইটি’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। গৌরীপুরে তার পিতা আব্দুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ডা. মাহমুদা খাতুন হাফেজিয়া মাদরাসার সভাপতিসহ একাধিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদিরের বিনামূল্যে এ চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য তিনি ২০১৬ সালের ২২ অক্টোর তিনি ভারতের তিরুচিরাপল্লীতে এ্যাসোসিয়েশন অফ কমিউনিটি অফথ্যালমলোজি ইন ইন্ডিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠানে লাইফ টাইম এ্যাচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, চক্ষু চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ্যাওয়ার্ড, ২০০২ সালে লায়ন্স এফ্রিসিওয়ান এ্যাওয়ার্ড, ২০০৫ সালে এএফএও কর্তৃক ডিসটিংগোয়িং সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড, একেদাস এ্যান্ডওমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, ২০১৫ সালে ভারতে গোল্ডমেডেলসহ দেশ ও বিদেশে ১৯টি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। তিনি ও তারই সহধর্মিণী ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় গড়ে উঠে উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ডাঃ মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদির জানান, মানুষের জন্য, মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও বেঁচে থাকার তাগিদ অনুভব করি। সেবাব্রত নিয়ে এ পেশায় এসেছিলাম। সেই পেশায় লাখো লাখো মানুষকে সেবা দিতে পেরে আমি গর্ব অনুভব করি। এ সেবা ও মানুষের কল্যাণে যেন কাটিয়ে যেতে পারি তার জন্য সকলের নিকট দোয়া প্রার্থী।
তিনি ও তার সহধর্মীনী অধ্যাপিকা ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় নিজ জন্মভূমিতে ২০০৪ সালে গড়ে তোলেন ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল। তাঁরই অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তোলা হাসপাতালটিতেও ইতোমধ্যে কয়েক লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন ক্যাম্পে ৯ হাজার ৫শ ৩৫ জনের অপারেশন সম্পন্ন করেন। এই হাসপাতালে ১৫ বছরে বিনামূল্যে চোখের জ্যাতি ফিরে পান ৭ হাজার ৯শ ৪৬ জন। দৈনন্দিন অপারেশন করা হয়েছে ছানি অপারেশন ৩২ হাজার ২শ ১৯ জন, নালি অপারেশন ৪ হাজার ১৭৮ জন, চোখের মাংস বৃদ্ধির অপারেশন ১ হাজার ৯২৮ জন, গ্লোকোমার ১ হাজার ৯৫২ জন, নেত্রনালির ১ হাজার ৯৪৮ জন, চোখে পাথর সংযোজন ৬১২ জন, চোখের পাতার অপারেশন ৬৮৯ জন, গুটি অপারেশন ৪৮৭ জন, টিউমার অপারেশন ৫৯৮ জন, টেরা চোখ অপারেশন ৮২ জন।
তিনি আরও জানান, ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালকে আরো অত্যাধুনিক ১০০ বেডের চিকিৎসার পাশাপাশি চক্ষু জাদুঘর গড়ে তোলবেন এ হাসপাতালে। যেখানে চোখের যন্ত্রাংশ ছাড়াও চোখ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
ডা. মুকতাদিরের মতো এমন গুণী মানুষ বাংলার প্রতিটি ঘরে জন্ম হউক এটাই সাধারণের প্রত্যাশা। ৭৭তম জন্মদিনে তাঁর উত্তরোত্তর সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Mainul Islam Mohin

সর্বাধিক পঠিত

দাউদকান্দিতে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন

গৌরীপুরের কৃতিসন্তান স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদিরের ৭৭তম জন্মদিন পালন

Update Time : 09:29:16 pm, Thursday, 25 January 2024

 

মোহাম্মদ সাইফুল আলম,
ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদির এর
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ৭৭তম জন্মদিন। তাঁর ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বিনামূল্যে হতদরিদ্র, অসহায় ও চিকিৎসাবঞ্চিত ৬২৮ জনের ছানি অপারেশন সম্পন্ন করবেন ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল। চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২০ সালে তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। দেশে গ্রামীণ এলাকায় চোখের চিকিৎসায় অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের বিলাসপুরে ২০২৩ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া অফথালমোজিক্যাল সোসাইটি -এর সম্মেলনে ‘গুরু পুজান’ পদক করেন।
জন্মদিন উপলক্ষে ময়মনসিংহের গৌরীপুর ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ একাডেমী অফ অর্থালোমোলজি ও বাংলাদেশ ইউবিয়া সোসাইটি’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। গৌরীপুরে তার পিতা আব্দুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ডা. মাহমুদা খাতুন হাফেজিয়া মাদরাসার সভাপতিসহ একাধিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদিরের বিনামূল্যে এ চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য তিনি ২০১৬ সালের ২২ অক্টোর তিনি ভারতের তিরুচিরাপল্লীতে এ্যাসোসিয়েশন অফ কমিউনিটি অফথ্যালমলোজি ইন ইন্ডিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠানে লাইফ টাইম এ্যাচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, চক্ষু চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ্যাওয়ার্ড, ২০০২ সালে লায়ন্স এফ্রিসিওয়ান এ্যাওয়ার্ড, ২০০৫ সালে এএফএও কর্তৃক ডিসটিংগোয়িং সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড, একেদাস এ্যান্ডওমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, ২০১৫ সালে ভারতে গোল্ডমেডেলসহ দেশ ও বিদেশে ১৯টি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। তিনি ও তারই সহধর্মিণী ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় গড়ে উঠে উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ডাঃ মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদির জানান, মানুষের জন্য, মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও বেঁচে থাকার তাগিদ অনুভব করি। সেবাব্রত নিয়ে এ পেশায় এসেছিলাম। সেই পেশায় লাখো লাখো মানুষকে সেবা দিতে পেরে আমি গর্ব অনুভব করি। এ সেবা ও মানুষের কল্যাণে যেন কাটিয়ে যেতে পারি তার জন্য সকলের নিকট দোয়া প্রার্থী।
তিনি ও তার সহধর্মীনী অধ্যাপিকা ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় নিজ জন্মভূমিতে ২০০৪ সালে গড়ে তোলেন ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল। তাঁরই অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তোলা হাসপাতালটিতেও ইতোমধ্যে কয়েক লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন ক্যাম্পে ৯ হাজার ৫শ ৩৫ জনের অপারেশন সম্পন্ন করেন। এই হাসপাতালে ১৫ বছরে বিনামূল্যে চোখের জ্যাতি ফিরে পান ৭ হাজার ৯শ ৪৬ জন। দৈনন্দিন অপারেশন করা হয়েছে ছানি অপারেশন ৩২ হাজার ২শ ১৯ জন, নালি অপারেশন ৪ হাজার ১৭৮ জন, চোখের মাংস বৃদ্ধির অপারেশন ১ হাজার ৯২৮ জন, গ্লোকোমার ১ হাজার ৯৫২ জন, নেত্রনালির ১ হাজার ৯৪৮ জন, চোখে পাথর সংযোজন ৬১২ জন, চোখের পাতার অপারেশন ৬৮৯ জন, গুটি অপারেশন ৪৮৭ জন, টিউমার অপারেশন ৫৯৮ জন, টেরা চোখ অপারেশন ৮২ জন।
তিনি আরও জানান, ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালকে আরো অত্যাধুনিক ১০০ বেডের চিকিৎসার পাশাপাশি চক্ষু জাদুঘর গড়ে তোলবেন এ হাসপাতালে। যেখানে চোখের যন্ত্রাংশ ছাড়াও চোখ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
ডা. মুকতাদিরের মতো এমন গুণী মানুষ বাংলার প্রতিটি ঘরে জন্ম হউক এটাই সাধারণের প্রত্যাশা। ৭৭তম জন্মদিনে তাঁর উত্তরোত্তর সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।