নিজস্ব প্রতিবেদক:
ই/এম বিভাগ-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. ময়নুল হককে ঘিরে টেন্ডার কারসাজি, কমিশন বাণিজ্য, ঠিকাদার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে কোটি টাকার লিফট-এসি স্থাপনে অনিয়মসহ একের পর এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রস্তুতের অংশ হিসেবে তাঁকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে গণমাধ্যম দৈনিক গণতদন্ত।
জানা অভিযোগগুলো আরও বিস্তৃত ও গুরুতর।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় যোগদানের পরও তিনি নানামুখী দুর্নীতির চক্রটি আগের মতোই সক্রিয় রেখেছেন। বিশেষ করে ঢাকা ই/এম বিভাগ-৩ এ দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তত ৩০টি টেন্ডার যেখানে এলটিএম হওয়া যুক্তিযুক্ততা ইচ্ছাকৃতভাবে ওটিএম পদ্ধতিতে আহ্বান করা হয়েছে। অভিযোগ অনুসারে, ওটিএম বেছে নেওয়ার কারণ ছিল “নিজের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারগোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া”।
অভিযোগ আরও বিস্তৃত:
উঠে এসেছে আরও বেশ কিছু টেন্ডার আইডির অনিয়ম যেসব টেন্ডারকে ঘিরে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে রয়েছে,
১১১৫৩৪৮, ১১১৩৬২৭, ১১১৩৬৮১, ১১১৩৬৮৪, ১১১৩৬৮৩, ১১১৩২১৬, ১১১৩২২৬, ১১১৩২৫৩, ১১১৩২৮১, ১১১৩৪৭৮, ১১১৩৮৩৭, ১১১২১৫১, ১১০৫৭৪০, ১১০২৩৯৩, ১১০২৪৩৯, ১১০৩৩৪৯, ১১০২৩৫৮, ১১০২৩৫১, ১০৯৭৩৮৭, ১০৯৫২০১, ১০৯৪৭৫৭, ১০৯৪৭২৪, ১০৯৩৯৬৩, ১০৮২২৮৩, ১০৮৬৭৯৫, ১০৮৬৯২৯, ১০৮১০৪৭, ১০৮০৬৬৩, ১০৭৫৭৯০
যেগুলোতে দরদাতাদের কোটেশন আগেই জানিয়ে দেওয়া, কমিশন নির্ধারণ, এবং নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারীরা দাবি করছেন শুধু কমিশনের অঙ্কই দেড় থেকে দুই কোটি টাকার কম নয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে দায়িত্ব পালনকালেও তাঁর বিরুদ্ধে চায়না লিফট বসিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, নিম্নমানের এসি স্থাপন, ভুয়া ভাউচার তৈরি এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ১১ জুন ২০২৫ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে।
এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাহনেওয়াজ এন্টারপ্রাইজ ও গ্রীন মার্কারকে শত কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়া এবং তাতে তাঁর ব্যক্তিগত আর্থিক স্বার্থ জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি রূপপুর প্রকল্পে আলোচিত প্রতিষ্ঠান সাজিন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে নিয়মভঙ্গ করে ৩.৫৩ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে, যেসব টেন্ডারে “চিটাগাং বিল্ডার্স কর্পোরেশন” সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েছে, সেসব টেন্ডার পুনরায় রি-টেন্ডার করানো হয়েছে। বিভিন্ন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন, ঘুষ না দিলে তাদের কাজ দেওয়া হয়নি; বরং টেন্ডার নন-রেসপন্সিভ দেখিয়ে বাতিল করা হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ । ৫:১৯ অপরাহ্ণ