সৌদি আরবে আরও দুটি মদের দোকান চালুর পরিকল্পনা: ভিশন-২০৩০ এর পথে নতুন পদক্ষেপ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫ । ২:১৭ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রিয়াদ, সৌদি আরব — মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরব তার চলমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে আরও দুটি মদের দোকান চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে একটি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর বিদেশি কর্মীদের জন্য এবং অন্যটি কূটনীতিকদের জন্য তৈরি করা হবে।

এই পদক্ষেপকে ডি-ফ্যাক্টো শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে বাস্তবায়ন করা ‘ভিশন-২০৩০’ কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 নতুন আউটলেট এবং লক্ষ্যবস্তু:

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই দুটি নতুন দোকান দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হবে:

আরামকোর মালিকানাধীন একটি চত্বরে (Compound) নতুন মদের দোকানটি খোলা হবে। এটি বিশেষভাবে আরামকোর অমুসলিম বিদেশি কর্মীদের জন্য পরিষেবা দেবে।

জেদ্দা: লোহিত সাগরের উপকূলীয় গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী জেদ্দায় অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য তৃতীয় একটি মদের দোকান চালুর কাজও চলছে।

সূত্র অনুযায়ী, এই দুটি দোকান ২০২৬ সালে চালু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ বা আরামকো আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

 ক্রমবর্ধমান বিধিনিষেধ শিথিলতা:

৭৩ বছর আগে দেশে মদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর, এই উদ্যোগটি সৌদি আরবের বিধিনিষেধ শিথিল করার ধারাবাহিকতার ইঙ্গিত দেয়।

প্রথম দোকান: গত বছর রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় প্রথম মদের দোকানটি চালু হয়েছিল। এটি শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য সংরক্ষিত ছিল।

  গ্রাহক সম্প্রসারণ:

সম্প্রতি রিয়াদের ঐ দোকানের গ্রাহক তালিকায় অমুসলিম সৌদি প্রিমিয়াম রেসিডেন্সিধারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি উদ্যোক্তা, বড় বিনিয়োগকারী এবং বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশিদের দেওয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি প্রতিভাকে আকৃষ্ট করার একটি প্রচেষ্টা।

 বৃহত্তর অর্থনৈতিক লক্ষ্যের প্রতিফলন:

এই ধরনের পদক্ষেপগুলো সৌদি আরবের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যায়নের পরিকল্পনা—ভিশন-২০৩০ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকার পর্যটনকে অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১৫ কোটি পর্যটককে আকৃষ্ট করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

যদিও বৃহত্তর মুসলিম জনসংখ্যার জন্য মদ এখনো নিষিদ্ধ, সীমিত পরিসরে এটির সহজলভ্যতা বিদেশি কর্মী, বিনিয়োগকারী এবং পর্যটকদের জন্য একটি ‘ফ্রেন্ডলি’ পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে সৌদি আরবের কঠোর রক্ষণশীল ভাবমূর্তি পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আপনার কি এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিক্রিয়া বা বিশ্লেষণী কোনো তথ্য জানতে চান?

প্রিন্ট করুন