তিতাস প্রতিনিধি
কুমিল্লার তিতাসে আদালতে চলমান মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই বিরোধপূর্ণ জায়গা জোরপূর্বক দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক পক্ষের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ক্রয়কৃত জায়গায় স্থাপিত দোকান সরিয়ে না নিলে এবং দোকানের ভাড়াটিয়ারা মালামাল নিয়ে চলে না গেলে, ভাঙচুর ও লুটপাটের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে বলের হুমকি দেয়া হয়েছে।
দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলার উজিরাকান্দি গ্রামের প্রয়াত নূরুল হক ভূঁইয়ার ছোট ছেলে ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মনিরুল হক তপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে অভিযোগ অনুসন্ধানে গেলে জানা যায়, উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের উজিরাকান্দি ভূঁইয়ার বাজারের উজিরাকান্দি মৌজার ৮৪ নং খতিয়ানের ৩৪৪ নং দাগের ২২ শতক ভূমির ওয়ারিশমূলে মালিক প্রয়াত নূরুল হক ভূইয়ার ৪ছেলে।
উক্ত ভূমির অন্দরে ৪.৮১ শতক ভূমি প্রয়াত নূরুল হক ভূঁইয়ার বড় ছেলে ওয়ারিশমূলে মালিক নাজমুল হক ভূঁইয়ার কাছ থেকে ক্রয় করেন এবং নিজ নিজ নামে নামজারী খারিজ খতিয়ান নং ৪০৩ সৃজন করেন শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। ক্রয়কৃত ঐ ভূমিতে বিনা বাধায় দোকানঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত ভাড়া দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও ভোগ দখল করে আসছেন তারা।
তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে, গত শনিবার ও রবিবার দুই দফায় একই দাগের অপর ওয়ারিশ মনিরুল হক তপন ভূঁইয়াসহ অপরাপর সহযোগিরা ভিটাসহ দোকানঘর জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং দোকানঘরের ভাড়াটিয়াদের মালামালসহ উচ্ছেদের হুমকি দেন। এর আগে ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টায় দোকানঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং ভুক্তভোগীদের হত্যা চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে প্রভাবশালী ওই মহলের বিরুদ্ধে। যা তিতাস থানায় বাদী হয়ে ভুক্তভোগী মোবারক মিয়া গত ১৫জুলাই একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মনিরুল হক তপন ভুইয়া গং উক্ত দাগের অপর সম্পত্তি ২০২৩ সালে মতিন মুন্সী গংদের নিকট বিক্রয় করে দেন। এখন তাহার বড় ভাইয়ের বিক্রীত জমি জবরদখল করতে চান চাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠে। তবে উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পিয়নশন মোকদ্দমা রয়েছে বলেও একাধিক সূত্র সাংবাদিকদের জানান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে, ভাড়াটিয়া শফিক জানায়, আমি গত ৬/৭মাস আগে উজিরাকান্দি গ্রামের শফিক ভুইয়ার কাছ থেকে দোকানটি ভাড়া নিছিলাম। এখন তপন ভুইয়া আমাদেরকে বলেছে দোকানের মালামাল সরিয়ে নিতে, তারা নতুন করে দোকান ঘর করে ভাড়া দিবে। যেহেতু আমরা ভাড়াটিয়া এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করি নাই।
অপর দোকানদার মো. ফারুক সরকার বলেন, আমাদেরকে দোকান থেকে ১সপ্তাহের মধ্যে চলে যেতে বলেছে। না গেলে দোকান ভাঙচুর করে উচ্ছেদ করে দিবে বলে তপন ভুইয়া হুমকি দিয়া গেছে। এখন আমরা তো ভাড়াটিয়া আমরা কি করবো?
জায়গার বিষয়ে আমিনুল ইসলাম ভূইয়া শফিকুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আমরা যাচাই বাছাই করে বৈধ পন্থায় জমিটি ক্রয় করেছি। আমাদের নামে নামজারি খারিজও রয়েছে। এখন তপন ভুইয়া বিএনপি’র ক্ষমতা দেখিয়ে আদালতের মিথ্যা রায়ের কথা বলে দোকানদারদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
আমরা তিতাস থানায় তপন ভুইয়াসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আলাদা দু’টি অভিযোগ দিয়েছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে তপন ভুইয়া বলেন, আমি জোর করে কিছু করি নাই। আদালতে পিয়নশন মামলা করেছি, তার রায় আমি পেয়েছি। সেই কারণে জায়গা ছেড়ে দিতে বলেছি। এটা তো বেআইনি নয়? যারা বলছে রয় পাইনি, তাদেরকে বলব যাচাই করে দেখুন। আদালত আমাকে রয় দিয়েছে কিনা? দূর থেকে বললে হবে না। যেহেতু আদালত রায় আমাকে দিয়েছে, আমার জায়গা ছড়ে দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক।