10:25 pm, Friday, 18 October 2024

কালো টাকা সাদা করা যাবে ১৫% কর দিয়ে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

  মানি লন্ডারিং ও কর ফাঁকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেই ফের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে সরকার।

চার বছরের বিরতির পর এবারের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ফের এ সুযোগ দেওয়া হলো।

১৫ শতাংশ কর দিয়ে যেকেউ অবৈধ টাকা বৈধ করতে পারবেন। একইসঙ্গে, এমন লোকেদের জন্য সাধারণ ক্ষমাও ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, কর দিয়ে টাকা বৈধ করলে ওই টাকার উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তুলবে না সরকারি সংস্থাগুলো।যদিও সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

এর আগে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে আলাপকালে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, এ ধরনের সুযোগ দেওয়া উচিত না।

“আমাদের মতো করদাতাদের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। আর যারা কর ফাঁকি দেয় বা চুরির টাকা নিয়ে আসে, তাদের দিতে হয় ১৫ শতাংশ। এটি আমাদের মতো করদাতাদের প্রতি অন্যায়।”

এ সিদ্ধান্ত জনগণকে কর প্রদানে নিরুৎসাহিত করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সুবিধা দেওয়া হলে সম্ভবত বিদেশ থেকে অর্থ ফিরে আসবে।”এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে, সরকার ১০ শতাংশ করের বিপরীতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, ২০২১ অর্থবছরে মোট ১১,৮৩৯ জন ব্যক্তি প্রায় ২০,৫০০ কোটি টাকা বৈধ করেছিলেন— যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ওই বছর এ খাত থেকে এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২,০৬৪ কোটি টাকা।এদিকে, দেশে ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য বর্তমানে সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ, যা এবারের বাজেটে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

অর্থাৎ, কালো টাকাধারীরা এবার চাইলে নিয়মিত কর হারের মাত্র অর্ধেক পরিশোধ করেই অঘোষিত বা অপ্রকাশিত অর্থ বৈধ করতে পারবেন।

বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী, অপ্রকাশিত অর্থ বৈধ করতে গেলে প্রদেয় পরিমাণের ওপর ১০ শতাংশ জরিমানাসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর পরিশোধের বিধান রয়েছে।এছাড়া, স্থান-ভিত্তিক কর পরিশোধ করে সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রেও অপ্রকাশিত অর্থ ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে আইনে।

এক্ষেত্রে পরবর্তীতে কালো টাকার উৎস অনুসন্ধানের অধিকার থাকে সরকারি সংস্থাগুলোর। তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মূল ধারার অর্থনীতিতে অপ্রকাশিত অর্থ নিয়ে আসা খুব বেশি কার্যকর বলে পরিচিত নয়।

এছাড়া, মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে অপ্রকাশিত অর্থ বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এ ধরনের বিনিয়োগকারীরা সাধারণ ক্ষমা উপভোগ করবেন।এর আগে ২০২২ অর্থবছরে, ৭ শতাংশ কর পরিশোধ করে বিদেশ থেকে অঘোষিত অর্থ দেশে আনার অনুমতি দিয়েছিল সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Mainul Islam Mohin

সর্বাধিক পঠিত

দাউদকান্দিতে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন

কালো টাকা সাদা করা যাবে ১৫% কর দিয়ে

Update Time : 05:18:52 pm, Thursday, 6 June 2024

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

  মানি লন্ডারিং ও কর ফাঁকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেই ফের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে সরকার।

চার বছরের বিরতির পর এবারের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ফের এ সুযোগ দেওয়া হলো।

১৫ শতাংশ কর দিয়ে যেকেউ অবৈধ টাকা বৈধ করতে পারবেন। একইসঙ্গে, এমন লোকেদের জন্য সাধারণ ক্ষমাও ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, কর দিয়ে টাকা বৈধ করলে ওই টাকার উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তুলবে না সরকারি সংস্থাগুলো।যদিও সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

এর আগে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে আলাপকালে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, এ ধরনের সুযোগ দেওয়া উচিত না।

“আমাদের মতো করদাতাদের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। আর যারা কর ফাঁকি দেয় বা চুরির টাকা নিয়ে আসে, তাদের দিতে হয় ১৫ শতাংশ। এটি আমাদের মতো করদাতাদের প্রতি অন্যায়।”

এ সিদ্ধান্ত জনগণকে কর প্রদানে নিরুৎসাহিত করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সুবিধা দেওয়া হলে সম্ভবত বিদেশ থেকে অর্থ ফিরে আসবে।”এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে, সরকার ১০ শতাংশ করের বিপরীতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, ২০২১ অর্থবছরে মোট ১১,৮৩৯ জন ব্যক্তি প্রায় ২০,৫০০ কোটি টাকা বৈধ করেছিলেন— যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ওই বছর এ খাত থেকে এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২,০৬৪ কোটি টাকা।এদিকে, দেশে ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য বর্তমানে সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ, যা এবারের বাজেটে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

অর্থাৎ, কালো টাকাধারীরা এবার চাইলে নিয়মিত কর হারের মাত্র অর্ধেক পরিশোধ করেই অঘোষিত বা অপ্রকাশিত অর্থ বৈধ করতে পারবেন।

বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী, অপ্রকাশিত অর্থ বৈধ করতে গেলে প্রদেয় পরিমাণের ওপর ১০ শতাংশ জরিমানাসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর পরিশোধের বিধান রয়েছে।এছাড়া, স্থান-ভিত্তিক কর পরিশোধ করে সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রেও অপ্রকাশিত অর্থ ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে আইনে।

এক্ষেত্রে পরবর্তীতে কালো টাকার উৎস অনুসন্ধানের অধিকার থাকে সরকারি সংস্থাগুলোর। তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মূল ধারার অর্থনীতিতে অপ্রকাশিত অর্থ নিয়ে আসা খুব বেশি কার্যকর বলে পরিচিত নয়।

এছাড়া, মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে অপ্রকাশিত অর্থ বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এ ধরনের বিনিয়োগকারীরা সাধারণ ক্ষমা উপভোগ করবেন।এর আগে ২০২২ অর্থবছরে, ৭ শতাংশ কর পরিশোধ করে বিদেশ থেকে অঘোষিত অর্থ দেশে আনার অনুমতি দিয়েছিল সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।