তিতাস সাব রেজিস্ট্রার অফিসে ছেলের প্রতারণার ফাঁদে পিতা
হালিম সৈকত, কুমিল্লা।।
তিতাস সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের কতিপয় কর্মচারীদের সহযোগিতায় তিতাসে কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তি বাবার সাথে জাল জালিয়াতি করে ৮১ শতক জায়গা রেজিস্ট্রি করার চেষ্টাকালে ধরা পড়ে যায়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী উত্তর আকালিয়া গ্রামের মৃত মনিরুদ্দিনের ছেলে মোঃ ছালাম তিতাস উপজেলা সাব- রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট মোঃ ছালামের ছেলে প্রবাসি খবিরকে ১ শতক জায়গা রেজিস্ট্রি দিতে আসে তিতাস সাব রেজিস্ট্রি অফিসে।
খবির প্রবাসে থাকায় তার ছোট ভাই কবিরকে দায়িত্ব দেন রেজিষ্ট্রি কাজে। কবির ছলছাতুরি করে কম্পিউটার অপারেটর আল আমিন ও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহায়ক মাহবুবের যোগসাজশে দুটি স্ট্যাম্পে দুটি দলিল সৃজন করে। একটিতে ১ শতক ও অপরটিতে ৮১ শতক।
১ শতকের দলিলটি সকলকে দেখালেও পরে কমিশনের মাধ্যমে একটি রুমে নিয়ে ৮১ শতক জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। মাহবুব বার বার ছালামকে বলতে থাকেন সাইন করেন, সাইন করেন। বিষয়টি ছালামের সন্দেহ হলে
তার সাথে থাকা ভাতিজা সুমনকে বলেন দলিলটি পড়ে শোনাও। সুমন পড়ে দেখেন ১ শতকের জায়গায় ৮১ শতক লিখা হয়েছে।
তাও খবিরের নামে নয়, কবিরের নামে দলিলটি লিখা হয়েছে।
শুরু হয় হৈ চৈ। এবিষয়ে মোঃ ছালাম বলেন,কবির আমার আপন ছেলে হলেও সে একজন প্রতারক। আমাকে ধোকা দিয়ে ১ শতকের স্থলে ৮১ শতক জায়গা নিয়ে যাচ্ছিল। আমি বিষয়টি টের পাওয়ায় সে তা করতে পারে নি। পরে সে পালিয়ে যায়।
আমাকে সাক্ষর করার জন্য বার বার জোর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের এক লোক। তার নাম মাহবুব। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে সাব রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছি।
এবিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, সাক্ষর করার সময় দলিল দাতাকে জিজ্ঞেস করি কয় শতক বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, ১ শতক। কিন্তু দলিলে লেখা ৮১ শতক। বিষয়টি সন্দেহ হলে আমি দলিলটি আটকে দেই। যদি আমার অফিসের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত কবির হোসেনকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি প্রথমে কথা বলতে চান নি।
পরে তিনি বলেন, আমরা দুই ভাই প্রবাস থেকে টাকা পাঠিয়ে বাবার নামে জমি কিনেছি। এখন আমাদের প্রয়োজনে আমরা জমি রেজিষ্ট্রেশন করে নিব। তবে বাবার সম্মতি নিয়েই দলিল করছিলাম। পর বাবা বেঁকে বসে, তাই রেজিষ্ট্রেশন আর করা যায়নি।
এবিষয়ে দলিল লেখক সমিতি জানিয়েছেন, কম্পিউটার অপারেটর আল আমিনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা যায় সে-ই মূল কালপিট। সে সকলের সাথে যোগসাজেশ করে অর্থের লোভে পড়ে প্রতারণামূলক কাজটি করার চেষ্টা করেছে কম্পিউটার অপারেটর আল আমিন।



