দিনাজপুর সওজে আসাদুজ্জামানকে ’কমিশন না দিলে বরাদ্দ বন্ধ!

নিজস্ব প্রতিনিধি:
দিনাজপুর সড়ক বিভাগের প্রকৌশল কার্যালয় এখন ঠিকাদারদের কাছে পরিচিত এক নাম—’কমিশন অফিস’। আর এর মূল নিয়ন্ত্রক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান। নিয়োগপত্রে ‘সরকারি কর্মচারী’, বাস্তবে ‘চুক্তিভিত্তিক কমিশন আদায়কারী’—এই দ্বৈত পরিচয়ের ভারে আজ নুয়ে পড়েছে পুরো সড়ক বিভাগ।
দ্বিতীয় দফায় আসাদুজ্জামানের দুঃসাহসিক বাণিজ্যিক কৌশল আরও পরিণত। ঠিকাদারদের অভিযোগ, কাজ পাওয়ার আগে শুধু কমিশনই নয়, আগে থেকেই দিতে হয় লিখিত বা মৌখিক ‘চুক্তি’। কে কতো দিতে পারবে, কত শতাংশ জমা পড়বে, কোন ঠিকাদার কাদের লোক—এসব না মিললে টেন্ডারে এলজিইডি বা সওজ নয়, ব্যর্থ হন ‘ক্যাশ হীন’ ঠিকাদাররা।
তদারকির নামে নির্বাহী প্রকৌশলী ঘন ঘন সরেজমিন যান না, বরং তার প্রতিনিধি হয়ে আসে ‘বিশেষ লোক’—যারা টাকা তোলার দায়িত্বে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের প্রতি তার একটাই নির্দেশ: “চুক্তির বাইরে কাজ নয়, কমিশন না দিলে বিল পাশ হবে না।” কয়েকজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, ১০ লাখ টাকার কাজেও ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম চুক্তির টাকা দিতে হয়েছে, বিল হওয়ার সময় আবারও নতুন করে ‘সিকিউরিটি’ দাবি করা হয়।
এদিকে এসব দুর্নীতির ফলে কাজের মানে ভয়াবহ অবনতি ঘটছে। পার্বতীপুর, বোচাগঞ্জ, ফুলবাড়ী ও নবাবগঞ্জে বিভিন্ন সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং, ধসে পড়ছে ইট সলিং। অথচ এসব কাজের বিল প্রায় সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়ে গেছে, প্রশ্নবিদ্ধ প্রক্রিয়ায়।
অভ্যন্তরীণ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান দিনাজপুরে যোগদানের পরপরই ‘নিজস্ব দলবল’ সেট করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তার কাজে বাধা, এমনকি ঠিকাদারদের ‘ব্ল্যাকলিস্ট’ করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অফিসের পুরনো ও সৎ কর্মকর্তাদের হয়রানি করে ঢাকায় বদলির পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চলবে….