মানিকগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলমের হরিলুট | পর্ব-০১

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ যেন ঘুরেফিরে দুর্নীতির আস্তানাতেই বন্দী। সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মারুফের কুখ্যাত অনিয়মের ধারা অব্যাহত রেখে এবার সেই আসনে বসেছেন আরেক ‘অভিজ্ঞ খেলোয়াড়’—মোঃ শাহরিয়ার আলম। ৩০তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর মানিকগঞ্জ সওজে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর থেকেই এলাকায় চাউর হয়ে পড়ে—তিনি সদর দপ্তরে অবস্থানকালে বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন ও ছত্রছায়ায় গড়ে তোলা একাধিক ‘কমিশন সিন্ডিকেটে’ জড়িত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, সদর দপ্তরে থাকাকালীন সময়ে প্রকল্প অনুমোদন, এস্টিমেট ভেটিং এবং টেন্ডার ফাইনালাইজেশনের মতো সংবেদনশীল প্রক্রিয়াগুলোতে মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই চলত না। সেই ‘দক্ষতা’ ও ‘দক্ষ পরিচালনার’ই যেন পুরস্কারস্বরূপ, মোটা অংকের বিনিময়ে শাহরিয়ার আলমের মানিকগঞ্জে পোস্টিং নিশ্চিত করা হয়।
মানিকগঞ্জে এসেই তিনি সাবেক প্রকৌশলী মারুফের দেখানো চোরাগলি পথ অনুসরণ করে আবারও দুর্নীতির চর্চা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, স্থানীয় ঠিকাদারদের কাছে ইতোমধ্যেই কমিশনের নির্ধারিত হার পৌঁছে গেছে, প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বশর্ত হিসেবে ঘুষকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টাও চলছে।
শুধু তাই নয়, বরাদ্দকৃত প্রকল্পগুলোর কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি। মাঠ পর্যায়ে তদারকি কিংবা প্রকৌশলগত মান যাচাইয়ের চেয়ে তার অফিস এখন ‘কমিশন সমন্বয় কেন্দ্র’ হিসেবেই বেশি পরিচিত।
সাধারণ জনগণের করের টাকায় বাস্তবায়িত হওয়ার কথা যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর, সেগুলো আজ কৌশলগত লুটপাটের কবলে। ‘টেকনিক্যাল ক্লিয়ারেন্স’, ‘এস্টিমেট আপ্রুভাল’ কিংবা ‘ডিপিপি রিভিশন’—সবকিছুই যেন এখন দালাল ও কমিশন নির্ভর পণ্য।
দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় ও সড়ক বিভাগ এখনই ব্যবস্থা না নিলে, মানিকগঞ্জ সওজ দ্রুতই আরেকটি দুর্নীতির দুর্গে রূপ নেবে, যেখানে প্রশাসনিক দায়িত্ব নয়, ‘ঘুষের বাজার দর’ হবে প্রকৌশল মূল্যায়নের মাপকাঠি।
চলবে….