বগুড়া সওজে অনিয়ম-দুর্নীতির খলনায়ক আবুল মনসুর আহমেদ | ৩য় পর্ব

নিজস্ব প্রতিনিধি
সড়ক ও জনপথ বিভাগের বগুড়া কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দিনকে দিন ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে শুধু অর্থ লুটপাট নয়, সরকারি দপ্তরের ভেতরে ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ, ঠিকাদার চাঁদাবাজি, প্রকৌশলী দলবল দিয়ে টেন্ডার ‘ম্যানেজমেন্ট’-এর অভিযোগও উঠে এসেছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, বগুড়ায় দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আবুল মনসুর স্থানীয় ঠিকাদারদের পাশ কাটিয়ে পাবনা থেকে আওয়ামীপন্থী একদল ‘বিশ্বস্ত কমিশনদাতা’ ঠিকাদার নিয়ে এসেছেন। সেই সঙ্গে গোপনে গড়ে তুলেছেন একটি টেন্ডার সিন্ডিকেট, যারা প্রকল্পের আগেই দরপত্র ফাঁস করে ভাগ বণ্টন চূড়ান্ত করে ফেলে।
বিশেষ করে, সদরের সাতমাথা-বামনপাড়া, শিবগঞ্জ-সোনাতলা সড়ক, নন্দীগ্রাম বাইপাস এবং কাহালু উপজেলার ভাঙ্গাব্রীজ-তালপুকুরিয়া রোডে যেসব কাজ হয়েছে, তার বেশিরভাগই প্রশ্নবিদ্ধ। ঠিকাদারদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, একেকটি প্রকল্পে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ কমিশন নেয়া হয়, যা ভাগ হয় তিন স্তরে—নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী এবং দপ্তরের কিছু দালাল কর্মচারীর মধ্যে।
এক ভুক্তভোগী ঠিকাদার জানান, “কাজ পাওয়ার আগে শুধু কাগজে নয়, আবুল মনসুরের লোকজন নগদ ‘ডাউন পেমেন্ট’ নেয়। না দিলে দরপত্র বাতিল বা কাজ আটকে দেয়ার হুমকি আসে।”
এছাড়া জানা গেছে, প্রকল্প বিল তুলতে হলে ‘অফিসে যোগাযোগ’ নয়, নির্দিষ্ট হোটেল বা ব্যক্তিগত গেস্টহাউসে চুক্তির পর অনুমোদন হয় বিল। কয়েকটি টেন্ডারে বিল অনুমোদনের আগেই ‘কমিশনের টাকা’ হাওলাদ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সওজের একজন সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী বলেন, “এই কর্মকর্তা ফাইলের চেয়ে লোক চালাতে ওস্তাদ। কীভাবে দুর্নীতি করলে ধরা পড়বে না—সেটা তার রক্তে মিশে গেছে।”
এতসব অভিযোগ সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় এখনো নিরব। যেনো ‘ক্ষমতার চাদরে ঢাকা’ পড়ে আছেন এই প্রকৌশলী। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে বগুড়ায় উন্নয়নের অর্থ শুধু হিসাবের খাতায় থাকবে, বাস্তবে নয়।
চলবে…