ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত এলজিইডি প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED) সম্প্রতি এক বিতর্কিত ইস্যুর কেন্দ্রে রয়েছে। ২০১৫ সালের স্পেশাল মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচ সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছে, যেখানে অভিযোগ উঠেছে যে কিছু ব্যক্তি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন।
এদের মধ্যে অন্যতম মাহফুজুর রহমান, যিনি ভালুকা উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মাহফুজুর রহমানের পিতা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যে সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন, তা ভুয়া। এর ফলে তিনি ২০১৫ সালের বিশেষ মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের নিয়মিত সদস্য হতে পারেননি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি সরকারি চাকরিতে সুবিধা পেয়েছেন এবং উচ্চপদে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন।
মাহফুজুর রহমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আজমের ভাগ্নী জামাই হওয়ায় প্রশাসনিক মহলে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এমনকি, তিনি ময়মনসিংহে মির্জা আজমের ব্যবসাও পরিচালনা করেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি বদলি ঠেকানোসহ নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, মাহফুজুর রহমান প্রকৌশল বিষয়ে তার বিএসসি ডিগ্রির সত্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তিনি যদি ভুয়া বিএসসি সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করে থাকেন, তাহলে এটি আইনত গুরুতর অপরাধ।
২০১৫ সালের স্পেশাল মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের প্রকৃত সদস্যরা সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অধিকার লঙ্ঘন করে কিছু অসাধু ব্যক্তি ভুয়া সনদের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ নিয়েছেন। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলজিইডিতে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। বিভিন্ন টেন্ডার ও প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও, বদলি ঠেকাতে তিনি প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে থাকেন এবং প্রশাসনিক দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করেন। এসব অনিয়মের কারণে এলজিইডির প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, যা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের দাবি ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি সত্যিই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা ভুয়া বিএসসি সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তিনি সরকারি চাকরি নিয়ে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ, ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমানের বিষয়ে ভালুকা এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যায়…



