রাবেয়া বসরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবন না থাকায় পাঠদানে চরম ভোগান্তি

শাহনাজ আক্তার রুবি হালিশহর, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর হাউজিং এস্টেট বিডিআর মাঠ সংলগ্নে অবস্থিত রাবেয়া বসরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে দুইটি ভবন রয়েছে। একটি তিনতলা ও অপরটি চার কক্ষ বিশিষ্ট দুই তলা। যেটা ছিল একাডেমিক ভবন। যেখানে চলতো শ্রেণি ও পাঠদান কার্যক্রম ।
দক্ষিণে রয়েছে মহেষ খাল। উত্তরে লেইন, পশ্চিমে আর্টিলারি সড়ক। একাডেমিক ভবনটি ১৯৯৮ সালের ২৪ অক্টোবর তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী এম এ মান্নান সাহেব উদ্বোধন করেছিলেন।

ছবি/ দৈনিক ভোরের নতুন বার্তা
২০২৩ সালে একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় টিন শেড দিয়ে করা হয়েছিল মিলনায়তন হল। ভবনের দক্ষিণে অবস্থিত খালের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানি নিষ্কাশনের জন্য খালের সংস্কার ও খনন কাজ চলছে।
বিধায় একাডেমিক ভবনটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় ভবনটি সম্পূর্ন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া অপর তিনতলা ভবনের দুইটি করে মোট ছয়টি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
সবমিলিয়ে দশটি কক্ষ ও একটি মিলনায়তন ভেঙ্গে ফেলায় জায়গা ও কক্ষের অভাবে শ্রেণি কার্যক্রম, পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তীব্র গরমে অসহনীয় যন্ত্রণা,
চরম ভোগান্তি যা বর্ণনা করা দুস্কর। বিদ্যালয়টি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর অত্র বিদ্যালয় সরকারি এমপিও ও ১৯৯৮ সালের একাডেমিক ভবনটি ছাড়া আর কোন সুযোগ সুবিধা পাইনি।
বিগত সরকারের সাড়ে পনেরো বছরে বিদ্যালয়টি বঞ্চনার কাতারেই ছিল। অনেক তদবির চেষ্টা করেও কোন ভবন পাইনি। আদো ভবন নির্মাণ হবে কিনা ? হলে তা কবে হবে ? এমন প্রশ্ন জনমুখে, অভিভাবক ও ছাত্রীদের মুখে মুখে। এ নিয়ে সর্বস্তরে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভবন ভাঙার পূর্বেও বারংবার চেষ্টা করেও কোন সুফল মিলেনি। ফলে পাইনি কোন ভবন ও কম্পিউটার সমৃদ্ধ জিডিটাল কোন ল্যাব। ভবন ভাঙার এক বছর কেটে গেলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আশার আলো ক্ষীণ।
বর্তমান কমিটি দায়সারাভাবে চলছে। ভবন নির্মাণে নেই কোন মাথাব্যাথা। নারী শিক্ষায় বিদ্যালয়টি যেভাবে এগিয়ে থাকার কথা। বরং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতার অভাবে উল্টো রয়েছে বহু পিছিয়ে।

দৈনিক ভোরের নতুন বার্তা
অত্র এলাকায় এ বিদ্যালয়ের রয়েছে যথেষ্ট সুনাম ও খ্যাতি। নারী শিক্ষার মডেল হিসেবে বেশ পরিচিত। নীতি ও নৈতিকতার আদর্শিক পাঠশালার অনুপম প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনন্য। এ বিদ্যালয়কে অনন্য মডেল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে সরকারি সহযোগিতার বিকল্প নেই।
দ্রুত সরকারি বরাদ্দে হোক কিংবা স্ব অর্থায়নে হোক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হলে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পাঠদান কার্যক্রম ও শিক্ষার যথাযথ গুণগত রক্ষা করা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
বর্তমান ভর্তি কার্যক্রম চলছে। এমনিতে নাই ভবন। নতুন ছাত্রীদের বসাবে কোথায় এনিয়ে শেষ নেই দুশ্চিন্তার। তবুও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব নির্বিকার।
এভাবে কতদিন চলবে ? কেন বা কি কারণে ভবন নির্মাণ হচ্ছে না তারও মিলছে না সুদুত্তর। যেহেতু অপর ভবনের কক্ষগুলো ছোট বিধায় শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর উপযোগী না। গাদাগাদি করে ৩০ জনের বেশি বসা যায়না।
প্রতি শ্রেণিতে ৭০/৮০ র বেশি ছাত্রী রয়েছে। তাছাড়া নেই টয়লেট সুবিধা। নেই কোন ওয়াশ রুম। নেই বিশুদ্ধ সুপেয় পানির ব্যবস্থা। আসছে গ্রীষ্মকাল।
তীব্র গরমে গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করা কতটা চরম অস্বস্তিদায়ক তা বর্ণনাতীত। লোডশেডিংয হলে দম ফেলা দায়। কোন কোন শ্রেণিতে ডাবল সেকশন রয়েছে।
ভবনের অভাবে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সেকশন বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। দুটি ভবনের মধ্যে একাডেমিক ভবনই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভবনের অভাবে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম দুই শিফটে কোনমতে জোড়াতালি চলছে।
ভবন ভাঙার পর বিগত একবছর পাঠদানে পোহাতে হয়েছে অসহনীয় দুর্ভোগ। ভোগতে হয়েছে অবর্ননীয় যন্ত্রণা। ভবন নির্মাণ কতটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে তা সরেজমিন পরিদর্শনে না গেলে বুঝার উপায় নেই। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এসব দেখার যেন কেউ নেই। বর্তমান কমিটি যেন নীরব দর্শক।
কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সুষ্ঠু সুন্দর সুচারুভাবে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম চালাতে ভবন নির্মাণের বিকল্প নেই। সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী, ছাত্রী ও অভিভাবকদের প্রাণের দাবি যে, সহসাই বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণে মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।