নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবানে এক কথিত সাংবাদিক সুর্য চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি, এমনকি মদ্যপান ও বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি নিজেকে বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন।
চাঁদাবাজির কৌশল
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সুর্য চৌধুরী বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দুর্বলতা খুঁজে পেলে তা নিয়ে ‘সংবাদ প্রকাশ’ করার ভয় দেখান। এরপর অর্থের বিনিময়ে ‘সংবাদ বন্ধ’ রাখার প্রস্তাব দেন। এমনকি কোন কোন সময় ক্যামেরা বা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে সেটিকে ‘প্রমাণ’ হিসেবে ব্যবহার করে চাপ প্রয়োগ করেন।
বান্দরবানের রুমা এলাকার এক দোকান মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “উনি আমার দোকানে এসে বললেন, লাইসেন্স নাই, এটা নিউজ হলে সমস্যা হবে। পরে বলেন, ১০ হাজার টাকা দিলে নিউজ হবে না।”
অসামাজিক কর্মকাণ্ড
অভিযোগ রয়েছে, সুর্য চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ি পর্যটন এলাকায় মদ্যপান করেন এবং মাদক সেবন করেন। স্থানীয় কয়েকজন জানান, তিনি সন্ধ্যার পর বিভিন্ন হোটেলে ‘গোপন আড্ডা’ দেন যেখানে মদপানসহ অসামাজিক কার্যকলাপ চলে।
এক স্থানীয় রিসোর্টের কর্মচারী জানান, “ওনাকে প্রায়ই দেখি সন্ধ্যার দিকে গেস্টদের সঙ্গে বসে মদ খেতে। আমাদের বারবার নিষেধ করলেও উনি বলেন—আমি সাংবাদিক, কেউ কিছু করতে পারবে না।”
সাংবাদিকতার আড়ালে ‘ব্যবসা’
বান্দরবানের প্রকৃত সাংবাদিকদের একাংশ জানিয়েছেন, সুর্য চৌধুরীর মত কথিত সাংবাদিকদের কারণে এলাকার সাংবাদিক সমাজ বিব্রত। বান্দরবান প্রেস ক্লাবের এক সদস্য বলেন, “সাংবাদিকতার নামে এমন চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই প্রশাসন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিক।”
প্রশাসনের অবস্থান
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন সজাগ রয়েছে।
সাংবাদিকতা একটি দায়িত্বশীল পেশা। কিছু অসাধু ব্যক্তি এই পেশার আড়ালে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টা চালিয়ে থাকেন, যা সমাজে সাংবাদিকতার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন নাগরিকদেরও এ ধরনের ব্যক্তিদের ব্যাপারে সতর্ক ও প্রতিবাদী হওয়া প্রয়োজন।