সাংবাদিকসহ তিনজনের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

দেবীগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় পৌর শহরের বিজয় চত্বর সংলগ্ন এশিয়ান হাইওয়েতে ‘দেবীগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারণ নাগরিক’ ব্যানারে এই মানববন্ধের আয়োজন করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক লালন সরকার আজকের বসুন্ধরা পত্রিকায় উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ৮ এপ্রিল পঞ্চগড় আদালতে হওয়া দুইটি মামলায় প্রধান আসামী করা হয় লালনকে। মামলার অপর দুই আসামী শাকিল ইসলাম ও হালিম। এর মধ্যে দেবীগঞ্জ সদর ইউনয়নের ইউপি সদস্য নুরজ্জামান মামলার বিবরণে উল্লেখ করেন, সম্প্রতি সাংবাদিক লালন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে উপচৌকি ভাজনী আশ্রয়নের ঘর ও জমি বিক্রির অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করেন। ইউপি সদস্যের অভিযোগ সংবাদ না করার শর্তে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন লালন। মামলায় আশ্রয়ন প্রকল্পের আরেক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে হালিম নামে একজনের বিরুদ্ধে গত ২৯ মার্চ মামলা হয় দেবীগঞ্জ থানায়। সেই ঘটনায় লালন পুনরায় দুইলাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তা না পেয়ে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেন।
আশ্রয়নের অপর বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের হালিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের পর সাংবাদিক লালন অভিযুক্তের এবং ভুক্তভোগীর একটি সাক্ষাৎকার ফেসবুকে পোস্ট করেন। যেখানে এই নারী দাবি করেন তার নাম পরিচয় প্রকাশ করে পরিকল্পিত ভাবে তার সম্মানহানি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার আশ্রয়নের প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ মামলা দুইটি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে সাংবাদিক লালন জানান, একই নারীর ভিডিও একাধিক ব্যক্তি ফেসবুকে পোস্ট করলেও মামলা হয়েছে শুধু আমার বিরুদ্ধে। আর ইউপি সদস্যের যে ঘটনার প্রেক্ষিতে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রায় দুই মাস পূর্বের ঘটনা। এতদিন পরে মামলা করা হলো। এতেই বুঝা যায় মামলা দুইটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হয়েছে। ইউপি সদস্য ওই নারীকে মামলা করতে প্ররোচিত করেছেন বলেও দাবি করেন তারা।
মামলার অপর আসামী শাকিল ইসলাম বলেন, মেম্বারের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে এলাকার সরব থাকি বলে আমাকে দুই মামলায় আসামী করা হয়েছে।
মানববন্ধনে ইউসুফ আলী নামে এক ব্যক্তি যাকে ওই নারীর দায়েরকৃত মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে যে স্বাক্ষী করা হয়েছে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত নন।
ইউপি সদস্যের মামলার স্বাক্ষী হেলাল বলেন, ঘটনার কিছু আমার জানা নেই। মামলার বিষয়টি শোনার পর এই বিষয়ে আমি মেম্বারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে কেন আমাকে স্বাক্ষী করা হলো।
উভয় মামলার প্রথম স্বাক্ষী কদম জানান, উভয় ঘটনার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। মামলা হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে তাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান বলেন,লালন সাংবাদিক আমার কাছে চাঁদা চেয়েছে এটা সত্য। মানব বন্ধনে যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারা আসামির বাবা, মা, ভাই।
মামলার সাক্ষী বাদীর বিপক্ষে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি (ইউসুফ) সবার আগে ফেসবুকে লালনের ভিডিও আমাকে দেখিয়েছিলেন। সেজন্য তাকে সাক্ষী করেছি। তবে সাক্ষী হিসেবে নাম দেওয়ার আগে তাকে বলিনি।