ধানের জমিতে কারেন্ট পোকা
ধানের জমিতে কারেন্ট পোকা দমনের উপায়
ধানের জমিতে কারেন্ট পোকার প্রধান লক্ষণলো হলো: ধানের পাতা ও কান্ডে প্রথমে ডিম্বাকৃতির হলদে দাগ পড়া, যা ধীরে ধীরে বাদামী হয়ে যায় এবং পুরো পাতা শুকিয়ে যায়। এটি ‘হপারবার্ন’ নামে পরিচিত এবং আক্রান্ত পুরো ক্ষেত দেখতে বাজ পড়া বা পোড়া মনে হয়। এছাড়াও, গাছ নেতিয়ে পড়ে হলদে হয়ে যায় এবং অবশেষে মরে যায়।
কারেন্ট পোকার লক্ষণসমূহ:
পাতায় দাগ: প্রথমে পাতায় ডিম্বাকৃতি হলদে বা কমলা রঙের দাগ দেখা দেয়, যা ধীরে ধীরে বাদামী রঙ ধারণ করে।
- পাতা শুকিয়ে যাওয়া: আক্রান্ত পাতাগুলি ধীরে ধীরে বাদামী হয়ে শুকিয়ে যায় এবং মরে যায়।
- হলদে হয়ে যাওয়া: আক্রান্ত গাছগুলি প্রথমে হলদে হয়ে যায় এবং পরে নেতিয়ে পড়ে।
- “হপারবার্ন”: অতি মাত্রার আক্রমণে আক্রান্ত ক্ষেতকে পোড়া বা বাজ পড়ার মতো দেখতে লাগে, যাকে “হপারবার্ন” বলা হয়।
- গাছ মরে যাওয়া: পোকার রস শোষণের ফলে গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়।
- পোকার উপস্থিতি: পূর্ণাঙ্গ বা অপরিণত পোকাগুলো (নিম্ফ) গাছের গোড়ায় এবং পাতার খোলে বসে রস শোষণ করে।
কারেন্ট পোকা (বাদামী গাছফড়িং) দমনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন, যেমন পাইমেট্রোজিন+নিটেনপাইরাম গ্রুপ সমৃদ্ধ কীটনাশক। স্প্রে করার সময় সঠিক নিয়ম মেনে চলুন, যেমন অনুমোদিত কীটনাশকের মাত্রা অনুযায়ী বাঁকা নজেল দিয়ে গাছের গোড়ায় ভালোভাবে স্প্রে করা। এছাড়া, কারেন্ট পোকার আক্রমণ বেশি হলে জরুরি ভিত্তিতে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন, কারণ এরা দ্রুত বংশবিস্তার করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে।কীটনাশক ব্যবহার:
- পাইমেট্রোজিন+নিটেনপাইরাম: এই গ্রুপের কীটনাশক, যেমন ‘সাবা’, কারেন্ট পোকা দমনে অত্যন্ত কার্যকরী।>পাইরাজিন ৭০ ডব্লিউ ডি জি একরে ৮০ গ্রাম হারে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সপসিন ২.৬ গ্রাম/লিটার হারে ব্যবহার করা যায়। ১০ লিটার পানিতে ২৬ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমি স্প্রে করা সম্ভব।
- সঠিক স্প্রে পদ্ধতি:
- জাতীয় কীটনাশকের প্যাকেটে উল্লেখিত মাত্রা ও নিয়ম অনুযায়ী স্প্রে করুন।
- স্প্রে করার জন্য বাঁকা নজেল ব্যবহার করে গাছের গোড়ায় ভালোভাবে স্প্রে করুন, কারণ পোকাগুলো সাধারণত গোড়ায় আক্রমণ করে।
- প্রতিরোধ ও দ্রুত ব্যবস্থা:
- আক্রমণ দেখা দিলে বা ৫০% এর বেশি ক্ষতি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
- গ্রামের সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন, যাতে পোকার বংশবিস্তার রোধ করা যায়।



