ঘুষ-দুর্নীতিতে গড়া অঢেল সম্পদ, মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে গণপূর্ত প্রকৌশলী লতিফুল ইসলাম

অনুসন্ধানী প্রতিবেদক :
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দাপট দেখিয়ে অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের শেরেবাংলা নগর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী লতিফুল ইসলাম। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি রাজনৈতিক নেতার মতো আচরণ করতেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলন দমাতে আর্থিক সহায়তা ও বিভিন্ন ধরনের রসদ সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সহিংসতায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় লতিফুলসহ ৯৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিমের ছত্রছায়ায় থেকে লতিফুল ইসলাম ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম চালিয়ে গেছেন। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সংস্কারকাজে ঘুষ ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে টেন্ডারে গোপন দর ফাঁস করা এবং অতিরিক্ত দরে মালামাল কেনার অভিযোগও রয়েছে।
জানা গেছে, অধীনস্থ কর্মকর্তাদের জোরপূর্বক নিজের বানানো প্রাক্কলনে সই করাতে বাধ্য করতেন তিনি। খুলনায় কর্মরত থাকাকালেও তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। বর্তমানে পদোন্নতির জন্য তিনি মরিয়া হয়ে ওঠেছেন।
লতিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় (সি.আর. ৬৩/২৫, এফআইআর নং-০৬, তারিখ: ০৩ মার্চ ২০২৫) মামলা রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবুও এখনো ঢাকায় বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, লতিফুল ইসলাম প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বরং তিনি মিষ্টার “১৫/.” নামে কুখ্যাত ঘুষখোর হিসেবে পরিচিত।
রাজধানীর পল্টন, রামপুরা ও সাভার থানায় হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি হয়েও লতিফুল ইসলাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্নীতি, দলীয়করণ, অনিয়ম আর ছাত্র-জনতা দমনে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাধারণ কর্মকর্তারা ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
তাঁর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।